Menu |||

বিএনপির গঠনতন্ত্রে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত

জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে পুনর্গঠন করা হবে ‘বিপর্যস্ত’ বিএনপিকে। ঈদুল আজহার পর মধ্য নভেম্বরে হবে বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল। কাউন্সিলে বিএনপির গঠনতন্ত্রে ব্যাপক সংশোধনী এনে দলটির কাঠামো ও পদে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে হাইকমান্ড। গঠনতন্ত্রের বিভিন্ন ধারা ও উপধারায় আনা হবে গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন ও বিয়োজন।

ইতিমধ্যে সংশোধনীর খসড়া প্রণয়নে দলের কয়েকজন সিনিয়র নেতার সমন্বয়ে একটি উপ-কমিটিও গঠন করা হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে সংশোধিত ‘গঠনতন্ত্রের খসড়া’ দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছে উপস্থাপন করা হবে।

বিএনপির পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত একাধিক নীতিনির্ধারক সূত্র জানিয়েছে, এতদিন গঠনতন্ত্রে দলের ‘চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদ’ থাকলেও এবারই প্রথম সরাসরি ‘বিএনপির উপদেষ্টা পরিষদ’ গঠনের বিধান রাখা হচ্ছে গঠনতন্ত্রে। তবে দলের চেয়ারপারসনকে পরামর্শ দিতে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক পৃথক বেশ কিছু ‘উপ-কমিটি’ বা ‘সেল’ গঠন করা হবে। প্রতিটি ১১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির সদস্য হবেন দলসমর্থক সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞরা।

বিগত কাউন্সিলে আলোচনা হলেও কার্যকর না হওয়া ‘এক নেতার এক পদ’ নীতিও এবার গঠনতন্ত্রের সংশোধনীতে সংযোজন করা হচ্ছে। দলের নেতা ও সমর্থক বুদ্ধিজীবীদের মতামতের ভিত্তিতে আরও বেশ কিছু সংশোধনী আনা হতে পারে। কাউন্সিলে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব করা হবে। দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটিতেও মেধাবী, সৎ, ত্যাগী ও সাহসী বেশ কিছু তরুণ নেতাকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। কাউন্সিলের আগে ঢাকা মহানগরসহ মেয়াদোত্তীর্ণ অন্য মহানগর, জেলা ও উপজেলা কমিটিগুলো পুনর্গঠন করা হবে। কাউন্সিলের পর আগামী ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিকে সামনে রেখে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে আবারও আন্দোলনে নামবে সাংগঠনিকভাবে নাজুক দলটি।

অবশ্য পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের দিন শুভেচ্ছা বিনিময়কালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সাংবাদিকদের বলেছেন, দল পুনর্গঠনের পর শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নামবেন তারা। এদিকে, দল পুনর্গঠনের জন্য কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে পৃথকভাবে রূপরেখা তৈরি করে জমা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন খালেদা জিয়া।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বুধবার বলেন, দল পুনর্গঠন একটি চলমান প্রক্রিয়া। ইতিমধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দল পুনর্গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। তার নির্দেশনা অনুযায়ী দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র নেতারা কাজ করছেন।

তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলার সময় এখনও আসেনি। দীর্ঘ ১৬ বছর পর ওয়ান-ইলেভেনে রাজনৈতিক বিপর্যয় কাটাতে ২০০৯ সালে ৮ ডিসেম্বর বিএনপির পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। গঠনতন্ত্রে তিন বছর পর পর দলের জাতীয় কাউন্সিল করার নিয়ম থাকলেও প্রায় ছয় বছরের মাথায় এসে হতে যাচ্ছে ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল। অবশ্য ইতিমধ্যে নানা সমস্যার কথা জানিয়ে কয়েক দফা নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে সময়ও চেয়ে নিয়েছে দলটি। বিগত কাউন্সিলে গঠনতন্ত্রে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদ সৃষ্টি, কমিটির পরিধি বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু সংশোধনী আনা হয়েছিল। তখন তৃণমূল নেতাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা অর্ধশতাধিক মতামতের অধিকাংশই আমলে নেওয়া হয়নি।

বিএনপির নীতিনির্ধারক বেশ কয়েকজন নেতা জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের পাশাপাশি দলসমর্থক বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবী নেতারাও সবার আগে দল পুনর্গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়া আড়াই মাস আগেই দল পুনর্গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, কাউন্সিলের মাধ্যমে ত্যাগী নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে দলকে শক্তিশালী করতে হবে।

গঠনতন্ত্র সংশোধনীর খসড়া প্রণয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত দু’জন নেতা জানান, এতদিন গঠনতন্ত্রে বিএনপির ‘চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদ’ ছিল। যা তার ব্যক্তিগত উপদেষ্টা, দলের উপদেষ্টা নয়। কার্যত বিএনপির কোনো উপদেষ্টা পরিষদ ছিল না। যেমনটি আছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ।

সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবারই প্রথম সরাসরি ‘বিএনপির উপদেষ্টা পরিষদ’ গঠন করা হচ্ছে। এতে দলের প্রবীণ, বয়োজ্যেষ্ঠ নেতাদের সিনিয়র উপদেষ্টা করা হবে। এক্ষেত্রে বর্তমানে বিএনপির স্থায়ী কমিটি, ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের কয়েকজন প্রবীণ ও বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যকেও ওই উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করা হবে।

সূত্র জানায়, বিগত কাউন্সিলে মাঠ পর্যায়ের নেতারা ‘এক নেতার এক পদে’র নিয়ম রাখার পক্ষে জোরালো দাবি তুললেও শেষ পর্যন্ত তা কার্যকর হয়নি। প্রভাবশালী নেতাদের চাপে গঠনতন্ত্রে তা যুক্ত করা যায়নি। এবার ‘একজনের এক পদ’ নীতি গঠনতন্ত্রে সংযোজন করা হচ্ছে। কোনো এক ব্যক্তি জেলা, মহানগর বা থানার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হয়ে আবার কেন্দ্রীয় বা অন্য কোনো স্তরের পদে থাকতে পারবেন না। বর্তমানে বিএনপির কোনো কোনো নেতা একাধারে ৩-৪টি পদেও রয়েছেন। উপজেলা, জেলা, মহানগরের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হয়ে আবার কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির পদে এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পদেও রয়েছেন। বড় দল হওয়াতে অনেক যোগ্য ও ত্যাগী নেতা হয়েও পদের অভাবে নেতৃত্বে আসার সুযোগ পাচ্ছেন না। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

স্থায়ী কমিটিতে আসবে তরুণ মুখ: জানা গেছে, বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হবে। বিশেষ করে বয়োবৃদ্ধ, অসুস্থ, নিষ্ক্রিয় ও বিতর্কিত কয়েকজন সদস্যকে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করা হবে। বর্তমানে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আরএ গনি, শামসুল ইসলাম, বেগম সারোয়ারী রহমান বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়েছেন। তাদেরও উপদেষ্টা পরিষদে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আগামী ২৯ জুলাই স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত রায় হওয়ার কথা। রায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত হলে তার পদটি শূন্য হবে। বর্তমান ১৯ সদস্যের জাতীয় স্থায়ী কমিটিতে কাউন্সিলে জনপ্রিয়, ক্লিন ইমেজধারী, মেধাবী, ত্যাগী ও সাহসী বেশ কিছু তরুণ নেতাকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে বিএনপির উচ্চপর্যায়ের সূত্র নিশ্চিত করেছে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান গতকাল বলেন, বিএনপি পুনর্গঠনই এখন প্রধান কাজ। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারামুক্ত দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামসহ সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করছেন। রূপরেখা তৈরির মাধ্যমে পুনর্গঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

‘ভারমুক্ত’ হবেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর: বিএনপির অভ্যন্তরে ক্ষুদ্র একটি অংশ বিরোধিতা করলেও শেষ পর্যন্ত ক্লিন ইমেজের অধিকারী ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ‘ভারমুক্ত’ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও লন্ডনে অবস্থানরত দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ বিষয়ে ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দিয়েছেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» তারেক মনোয়ার একজন স্পষ্ট মিথ্যাবাদী

» কুয়েতে নতুন আইনে অবৈধ প্রবাসীদের কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে

» সোশ্যাল প্লাটফর্মে লন্ডনী মেয়েদের বেলেল্লাপনা,চাম্পাবাত সবার শীর্ষে

» ফারুকীর পদত্যাগের বিষয়টি সঠিক নয়

» পাকিস্তান থেকে সেই আলোচিত জাহাজে যা যা এল

» মিছিল করায় আট মাস ধরে সৌদি কারাগারে ৯৩ প্রবাসী, দুশ্চিন্তায় পরিবার

» কুয়েতে যুবলীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

» ক্ষমা না চাইলে নুরের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়

» বাকু থেকে ফিরলেন ড. মুহাম্মাদ ইউনূস

» শুক্রবার আহত ও শহীদদের স্মরণে কর্মসূচি দিলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
,

বিএনপির গঠনতন্ত্রে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত

জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে পুনর্গঠন করা হবে ‘বিপর্যস্ত’ বিএনপিকে। ঈদুল আজহার পর মধ্য নভেম্বরে হবে বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল। কাউন্সিলে বিএনপির গঠনতন্ত্রে ব্যাপক সংশোধনী এনে দলটির কাঠামো ও পদে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে হাইকমান্ড। গঠনতন্ত্রের বিভিন্ন ধারা ও উপধারায় আনা হবে গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন ও বিয়োজন।

ইতিমধ্যে সংশোধনীর খসড়া প্রণয়নে দলের কয়েকজন সিনিয়র নেতার সমন্বয়ে একটি উপ-কমিটিও গঠন করা হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে সংশোধিত ‘গঠনতন্ত্রের খসড়া’ দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছে উপস্থাপন করা হবে।

বিএনপির পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত একাধিক নীতিনির্ধারক সূত্র জানিয়েছে, এতদিন গঠনতন্ত্রে দলের ‘চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদ’ থাকলেও এবারই প্রথম সরাসরি ‘বিএনপির উপদেষ্টা পরিষদ’ গঠনের বিধান রাখা হচ্ছে গঠনতন্ত্রে। তবে দলের চেয়ারপারসনকে পরামর্শ দিতে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক পৃথক বেশ কিছু ‘উপ-কমিটি’ বা ‘সেল’ গঠন করা হবে। প্রতিটি ১১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির সদস্য হবেন দলসমর্থক সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞরা।

বিগত কাউন্সিলে আলোচনা হলেও কার্যকর না হওয়া ‘এক নেতার এক পদ’ নীতিও এবার গঠনতন্ত্রের সংশোধনীতে সংযোজন করা হচ্ছে। দলের নেতা ও সমর্থক বুদ্ধিজীবীদের মতামতের ভিত্তিতে আরও বেশ কিছু সংশোধনী আনা হতে পারে। কাউন্সিলে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব করা হবে। দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটিতেও মেধাবী, সৎ, ত্যাগী ও সাহসী বেশ কিছু তরুণ নেতাকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। কাউন্সিলের আগে ঢাকা মহানগরসহ মেয়াদোত্তীর্ণ অন্য মহানগর, জেলা ও উপজেলা কমিটিগুলো পুনর্গঠন করা হবে। কাউন্সিলের পর আগামী ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিকে সামনে রেখে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে আবারও আন্দোলনে নামবে সাংগঠনিকভাবে নাজুক দলটি।

অবশ্য পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের দিন শুভেচ্ছা বিনিময়কালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সাংবাদিকদের বলেছেন, দল পুনর্গঠনের পর শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নামবেন তারা। এদিকে, দল পুনর্গঠনের জন্য কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে পৃথকভাবে রূপরেখা তৈরি করে জমা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন খালেদা জিয়া।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বুধবার বলেন, দল পুনর্গঠন একটি চলমান প্রক্রিয়া। ইতিমধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দল পুনর্গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। তার নির্দেশনা অনুযায়ী দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র নেতারা কাজ করছেন।

তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলার সময় এখনও আসেনি। দীর্ঘ ১৬ বছর পর ওয়ান-ইলেভেনে রাজনৈতিক বিপর্যয় কাটাতে ২০০৯ সালে ৮ ডিসেম্বর বিএনপির পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। গঠনতন্ত্রে তিন বছর পর পর দলের জাতীয় কাউন্সিল করার নিয়ম থাকলেও প্রায় ছয় বছরের মাথায় এসে হতে যাচ্ছে ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল। অবশ্য ইতিমধ্যে নানা সমস্যার কথা জানিয়ে কয়েক দফা নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে সময়ও চেয়ে নিয়েছে দলটি। বিগত কাউন্সিলে গঠনতন্ত্রে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদ সৃষ্টি, কমিটির পরিধি বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু সংশোধনী আনা হয়েছিল। তখন তৃণমূল নেতাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা অর্ধশতাধিক মতামতের অধিকাংশই আমলে নেওয়া হয়নি।

বিএনপির নীতিনির্ধারক বেশ কয়েকজন নেতা জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের পাশাপাশি দলসমর্থক বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবী নেতারাও সবার আগে দল পুনর্গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়া আড়াই মাস আগেই দল পুনর্গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, কাউন্সিলের মাধ্যমে ত্যাগী নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে দলকে শক্তিশালী করতে হবে।

গঠনতন্ত্র সংশোধনীর খসড়া প্রণয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত দু’জন নেতা জানান, এতদিন গঠনতন্ত্রে বিএনপির ‘চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদ’ ছিল। যা তার ব্যক্তিগত উপদেষ্টা, দলের উপদেষ্টা নয়। কার্যত বিএনপির কোনো উপদেষ্টা পরিষদ ছিল না। যেমনটি আছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ।

সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবারই প্রথম সরাসরি ‘বিএনপির উপদেষ্টা পরিষদ’ গঠন করা হচ্ছে। এতে দলের প্রবীণ, বয়োজ্যেষ্ঠ নেতাদের সিনিয়র উপদেষ্টা করা হবে। এক্ষেত্রে বর্তমানে বিএনপির স্থায়ী কমিটি, ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের কয়েকজন প্রবীণ ও বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যকেও ওই উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করা হবে।

সূত্র জানায়, বিগত কাউন্সিলে মাঠ পর্যায়ের নেতারা ‘এক নেতার এক পদে’র নিয়ম রাখার পক্ষে জোরালো দাবি তুললেও শেষ পর্যন্ত তা কার্যকর হয়নি। প্রভাবশালী নেতাদের চাপে গঠনতন্ত্রে তা যুক্ত করা যায়নি। এবার ‘একজনের এক পদ’ নীতি গঠনতন্ত্রে সংযোজন করা হচ্ছে। কোনো এক ব্যক্তি জেলা, মহানগর বা থানার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হয়ে আবার কেন্দ্রীয় বা অন্য কোনো স্তরের পদে থাকতে পারবেন না। বর্তমানে বিএনপির কোনো কোনো নেতা একাধারে ৩-৪টি পদেও রয়েছেন। উপজেলা, জেলা, মহানগরের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হয়ে আবার কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির পদে এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পদেও রয়েছেন। বড় দল হওয়াতে অনেক যোগ্য ও ত্যাগী নেতা হয়েও পদের অভাবে নেতৃত্বে আসার সুযোগ পাচ্ছেন না। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

স্থায়ী কমিটিতে আসবে তরুণ মুখ: জানা গেছে, বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হবে। বিশেষ করে বয়োবৃদ্ধ, অসুস্থ, নিষ্ক্রিয় ও বিতর্কিত কয়েকজন সদস্যকে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করা হবে। বর্তমানে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আরএ গনি, শামসুল ইসলাম, বেগম সারোয়ারী রহমান বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়েছেন। তাদেরও উপদেষ্টা পরিষদে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আগামী ২৯ জুলাই স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত রায় হওয়ার কথা। রায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত হলে তার পদটি শূন্য হবে। বর্তমান ১৯ সদস্যের জাতীয় স্থায়ী কমিটিতে কাউন্সিলে জনপ্রিয়, ক্লিন ইমেজধারী, মেধাবী, ত্যাগী ও সাহসী বেশ কিছু তরুণ নেতাকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে বিএনপির উচ্চপর্যায়ের সূত্র নিশ্চিত করেছে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান গতকাল বলেন, বিএনপি পুনর্গঠনই এখন প্রধান কাজ। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারামুক্ত দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামসহ সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করছেন। রূপরেখা তৈরির মাধ্যমে পুনর্গঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

‘ভারমুক্ত’ হবেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর: বিএনপির অভ্যন্তরে ক্ষুদ্র একটি অংশ বিরোধিতা করলেও শেষ পর্যন্ত ক্লিন ইমেজের অধিকারী ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ‘ভারমুক্ত’ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও লন্ডনে অবস্থানরত দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ বিষয়ে ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দিয়েছেন।

Facebook Comments Box


এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



Exchange Rate

Exchange Rate EUR: Thu, 21 Nov.

সর্বশেষ খবর



Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Bangladesh Office

Director. Rumi Begum
Adviser. Advocate Koyes Ahmed
Desk Editor (Dhaka) Saiyedul Islam
44, Probal Housing (4th floor), Ring Road, Mohammadpur,
Dhaka-1207. Bangladesh
Contact: +8801733966556 /+8801316861577

Email Address

agrodristi@gmail.com, agrodristitv@gmail.com

Licence No.

MC- 00158/07      MC- 00032/13

Design & Devaloped BY Popular-IT.Com
error: দুঃখিত! অনুলিপি অনুমোদিত নয়।